যাকে সরানো হলো ‘অযোগ্য’ বলে, পরামর্শ নিতে হলো ‘অপরিহার্য’ জেনে
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 11 ঘন্টা আগেআপডেট: 17 সেকেন্ড আগে- 1
যাকে সরানো হলো ‘অযোগ্য’ বলে, পরামর্শ নিতে হলো ‘অপরিহার্য’ জেনে
- 2
বিসিবি নির্বাচন, ফিক্সিং ইঙ্গিত ও ক্রীড়া উপদেষ্টার ‘সীমিত হস্তক্ষেপ’: আড়ালের গল্প কী?
- 3
শাস্তি এড়াতে এশিয়া কাপে পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে ভারত
- 4
নিজাকাতের প্রিয় খেলোয়াড় সাকিব, স্পিনেই বাজিমাত করতে চায় হংকং
- 5
চ্যাম্পিয়নশিপের স্বাদ পেতে চান, এশিয়া কাপে আশাবাদী লিটন দাস

যাকে সরানো হলো ‘অযোগ্য’ বলে, পরামর্শ নিতে হলো ‘অপরিহার্য’ জেনে
যাকে সরানো হলো ‘অযোগ্য’ বলে, পরামর্শ নিতে হলো ‘অপরিহার্য’ জেনে
বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো সাবেক অধিনায়ক ফারুক আহমেদকে। অথচ বোর্ড পুনর্গঠনে আবার তাঁর দ্বারস্থ হয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। তাই প্রশ্ন উঠছে, এ সিদ্ধান্ত প্রশাসনিক, না রাজনৈতিক?
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নেতৃত্বে সাম্প্রতিক পরিবর্তন নিয়ে এখন আলোচনা তুঙ্গে। সাবেক সভাপতি ও নির্বাচক ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ‘পারফরম্যান্স সন্তোষজনক নয়’ এই যুক্তিতে। কিন্তু এর কিছুদিন পরই দেখা গেল, একই ব্যক্তির কাছ থেকেই পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের গঠন ও ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণে। প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের এমন দ্বৈততা প্রশ্ন তো তোলে বটেই, আঙ্গুল তোলে এর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিকেও।
ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব সম্প্রতি এক মতবিনিময় সভায় জানিয়েছেন, ফারুক আহমেদের বোর্ড সভাপতির পদে কাজ ‘সন্তোষজনক’ মনে হয়নি, তাই পরিবর্তন করা হয়েছে। আমিনুল ইসলাম বুলবুলের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয় ‘দক্ষ নেতৃত্বের আশায়’।
মাস না যেতেই দেখা গেল ভিন্ন চিত্র, অক্টোবরে বিসিবি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিসিবির নতুন পরিচালনা পরিষদ সাজাতে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদই আবার বৈঠকে বসেন ফারুক আহমেদের সাথে।
সম্প্রতি ফারুক আহমেদের সাথে বৈঠক নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা জানান, ফারুক আহমেদের সঙ্গেই তিনি বিসিবির নতুন পরিচালনা পর্ষদের কাঠামো নিয়ে ‘খোলামেলা’ আলোচনা করেছেন, যেখানে নির্ধারিত হয়েছে বোর্ডে কারা টেকনিক্যাল হতে পারেন, কারা প্রশাসনিক।
এখানে স্পষ্ট দ্বৈততা লক্ষ্য করা যায়: একদিকে অপসারণ, অন্যদিকে পরামর্শ! যা মূলত বিসিবির অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও প্রভাব বলয়ের সংঘাতেরই ইঙ্গিত দেয়।
বলা হচ্ছে, ফারুক আহমেদ ক্রিকেট থেকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছিলেন ক্লাব রাজনীতি ও নিজের অবস্থান পোক্ত করার দিকে। সেই যুক্তিতে তাঁকে সরানো হয়। কিন্তু পরে সেই ব্যক্তির অভিজ্ঞতা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠল যে, বোর্ড গঠনের মত স্পর্শকাতর বিষয়ে তাঁর মতামত নেওয়া অনিবার্য হয়ে উঠল। এতে বোঝা যায়, ফারুককে হয়তো একধরনের ‘নিরাপদ দূরত্বে’ রাখা হয়েছে। যেন ক্ষমতা না থাকে, কিন্তু অভিজ্ঞতা থেকে সুবিধা নেওয়া যায়।
গুঞ্জন আছে, তামিম ইকবালের আত্মীয় হওয়ার সুবাদে ফারুক আহমেদ বিসিবিতে একসময় তামিমপন্থী একটি বলয়ের নেতৃত্ব দিতে পারেন। এই সম্ভাবনা থেকেই তাঁকে প্রধান পদে রাখা হয়নি। কিন্তু রাজনৈতিক ভারসাম্য রক্ষা করতে তাঁর সঙ্গে সম্পর্কও পুরোপুরি ছিন্ন করা হয়নি।
এটি স্পষ্ট, বিসিবির সাম্প্রতিক নেতৃত্ব পরিবর্তন কেবল পারফরম্যান্স নির্ভর ছিল না বরং এটি ছিল একধরনের রাজনৈতিক কৌশল। অভিজ্ঞতা ও গ্রহণযোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও, যাঁরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে চান, তাঁদের জায়গা নড়বড়ে হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে তাঁদের অভিজ্ঞতাকে পুরোপুরি বাতিল করাও সম্ভব হয় না।
ফলে, ফারুক আহমেদকে বোর্ড সভাপতির পদ থেকে সরানো হলেও, ক্রীড়া প্রশাসনের প্রয়োজনে তিনি থেকেই যান পরোক্ষ প্রভাবক হিসেবে। এটি আমাদের ক্রীড়া প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও নীতিগত নেতৃত্বের অভাব এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব উভয়কেই স্পষ্ট করে তোলে।