Image

একপেশে লড়াইয়ে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত

৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল

প্রকাশ: 3 ঘন্টা আগেআপডেট: 20 মিনিট আগে
একপেশে লড়াইয়ে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত

একপেশে লড়াইয়ে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত

একপেশে লড়াইয়ে পাকিস্তানকে উড়িয়ে দিল ভারত

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে এখন আর অতীতের সেই টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে না। মাঠে উত্তাপও তেমন একটা ছড়ায় না। ভারত-পাকিস্তান লড়াইয়ে যে সামান্য আলোচনা-সমালোচনার রঙ মিশে থাকে, তা মূলত দুই দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকেই। এবারের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম ছিল না। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে দুই দলের ম্যাচ আদৌ হবে কি না, তা নিয়েই ছিল অনিশ্চয়তা। সেই সংশয় কাটিয়ে দুই দল যখন মাঠে মুখোমুখি, তখন তা রূপ নেয় একপেশে লড়াইয়ে।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ১২৭ রানের সংগ্রহই ছিল তার প্রমাণ, আর এই রান ভারতীয় ব্যাটাররা মাত্র ১৫.৫ ওভারে টপকে যান। অভিষেক শর্মা (৩৩) ও সুর্যকুমার যাদব (৪৭) পাকিস্তানের বোলারদের কোনো রকম প্রতিরোধ গড়তে দেননি।

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই একসময় হয়ে উঠত ভারতের ব্যাটার বনাম পাকিস্তানের বোলারদের লড়াই। ভারত বরাবরই ব্যাটিং শক্তিতে পরিপূর্ণ, আর পাকিস্তানের গৌরব তাদের পেস আক্রমণ। সেকালের ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আখতারের পথ ধরে একালের শাহিন শাহ আফ্রিদি, নাসিম শাহরাও সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। ভারতের ক্ষেত্রেও শচীন টেন্ডুলকার, সৌরভ গাঙ্গুলি, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা থেকে শুরু করে একালের শুভমান গিল, সুর্যকুমার যাদব সবার ব্যাটিং প্রতিভার ছাপ স্পষ্ট।

তবে এই লড়াই জমে না তখনই, যখন পাকিস্তান আগে ব্যাট করে। রোববার, দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে যেন সেটাই হলো, পাকিস্তানের ব্যাটারদের বিপক্ষে ভারতের বোলারদের একতরফা দাপট।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ব্যাটাররা একপ্রকার আত্মসমর্পণই করেন ভারতের বলিং আক্রমণের সামনে। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল শুরুতে সাহিবজাদা ফারহান (৪০) ও শেষে শাহিন শাহ আফ্রিদি (৩৩*)। মাঝখানে কিছুটা লড়েছিলেন ফখর জামান (১৯)।

দলীয় ১ রানের মাথায় ওপেনার সাইম আইয়ুবকে হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান। রান খোলার আগেই হার্দিক পান্ডিয়ার বলে বুমরাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ডাক মেরে। তিনে নামা মোহাম্মদ হারিসও টিকতে পারেননি, মাত্র ৩ রান করে বুমরাহর বলে পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়েন।

এরপর ওপেনার ফারহানের ব্যাটে কিছুটা আশার আলো জ্বলে, আর অন্যপ্রান্তে ফখর জাগান সাহস। দুজন মিলে যোগ করেন ৩৯ রান। তবে ১৭ রানে ফখরকে ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন ভারতের স্পিনার আক্সার প্যাটেল।

এর পরপরই পাকিস্তানের ইনিংসে নামে ধস। মাত্র ১৯ রানের ব্যবধানে হারায় তিন উইকেট। সালমান আঘা (১১), হাসান নওয়াজ (৫), মোহাম্মদ নওয়াজ (০)। সালমানকে ফেরান আক্সার প্যাটেল, আর কুলদীপ যাদবের জোড়া আঘাতে ফেরেন দুই নওয়াজ। ৬৪ রানে ৬ উইকেট হারায় পাকিস্তান।

ফারহান চেষ্টা করছিলেন একপ্রান্ত আগলে রাখার, তবে ব্যক্তিগত ৪০ রানে কুলদীপ তাঁকেও ফেরান। যদিও তাঁর ৪৪ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে সাজানো ৪০ রানের ইনিংসটি টি-টোয়েন্টি সুলভ ছিল না। তবে পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে ফারহানের প্রচেষ্টা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার।
শেষদিকে আফ্রিদির ঝড়ে পাকিস্তান ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেটে ১২৭ রানের সম্মানজনক স্কোর গড়ে। ১৬ বলে ৪ ছক্কায় ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

ভারতের হয়ে কুলদীপ যাদব ১৮ রানে ৩ উইকেট নেন। এছাড়া জাসপ্রিত বুমরাহ ও আক্সার প্যাটেল ২টি করে উইকেট নেন। হার্দিক পান্ডিয়া ও ভরুণ চক্রবর্তী একটি করে উইকেট শিকার করেন।

মাত্র ১২৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ ছিল পাকিস্তানের পেস আক্রমণ, বিশেষ করে শাহিন শাহ আফ্রিদি। তবে আফ্রিদি এই ম্যাচে নিজের সেরা ফর্মে ছিলেন না। উল্টো, বল হাতে নজর কাড়েন সাইম আইয়ুব।

গিল ও অভিষেকের বিপক্ষে আফ্রিদি সুবিধা করতে পারেননি। তবে সাইম আইয়ুবই পাকিস্তানকে প্রথম সাফল্য এনে দেন, শুভমান গিলকে (১০) ফেরান তিনি। এরপর আগ্রাসী অভিষেক শর্মাও (১৩ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৩৩) সাইমের শিকার হন, ফাহিম আশরাফের ক্যাচে।

তিনে নামা সুর্যকুমার যাদব ছিলেন শুরু থেকেই সাবলীল। চারে নামা তিলক ভার্মাকে (৩৩) সঙ্গী করে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। তিলককে ফেরান সাইম, ফলে ৯৭ রানে ৩ উইকেট হারায় ভারত।
তবে এরপর আর কোনো উইকেটের সুযোগ দেননি সুর্যকুমার। পাঁচে নামা শিভম দুবেকে সঙ্গে নিয়ে ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে সুফিয়ান মুকিমকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন ভারতের অধিনায়ক। সুর্যকুমারের ৩৭ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংস ছিল নেতৃত্বসুলভ। শিভম দুবে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন।

পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার ছিলেন সাইম আইয়ুব, ৪ ওভারে ৩৫ রানে নেন ৩ উইকেট। আবরার আহমেদ উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দেন। শাহিন আফ্রিদি ২ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।
 

Details Bottom
Details ad One
Details Two
Details Three