নাসুম এলেন, খেললেন, জয় এনে দিলেন
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 20 ঘন্টা আগেআপডেট: 1 ঘন্টা আগে
নাসুম এলেন, খেললেন, জয় এনে দিলেন
নাসুম এলেন, খেললেন, জয় এনে দিলেন
বাংলাদেশের ১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তান থেমে যায় ১৪৬ রানে। ম্যাচজুড়ে বল হাতে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন বাংলাদেশের বোলাররা, যার নেতৃত্বে ছিলেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। শুরুতেই ইনিংসের প্রথম বলে উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনি। পরে রিশাদ হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গী হয়ে গড়ে তোলেন বোলিং সাফল্যের মঞ্চ। তাঁদের সম্মিলিত সাফল্যে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে আফগানিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপে সুপার ফোরের আশা টিকিয়ে রাখল বাংলাদেশ।
মাত্র ১৫৪ রানে থামিয়ে আফগান ব্যাটিং লাইনআপ গুটিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজন ছিল শুরুর চাপ তৈরি করার। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশ অধিনায়ক প্রথম ওভারেই বল তুলে দেন নাসুম আহমেদের হাতে। আস্থার প্রতিদান দিতে দেরি করেননি তিনি। ইনিংসের প্রথম বলেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন আফগান ওপেনার সাদিকুল্লাহ আতালকে। অফ স্টাম্পের ওপর থেকে ভাসিয়ে করা ডেলিভারিটি ঢুকে যায় ব্যাট-প্যাডের মাঝখান দিয়ে। ব্যাটসম্যান বল বুঝে ওঠার আগেই পেছনের প্যাডে আঘাত করে, এবং আম্পায়ার নির্দ্বিধায় আঙুল তোলেন।
প্রথম ওভারেই উইকেট তুলে নিয়ে আফগান ব্যাটিং অর্ডারে চাপ সৃষ্টি করেন নাসুম। নিজের তৃতীয় ওভারে এসে ফেরান আফগানিস্তানের অন্যতম নির্ভরযোগ্য ব্যাটার ইব্রাহিম জাদরানকে। এবারও এলবিডব্লিউর শিকার। রিভিউ নিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। বল স্টাম্পে আঘাত করার সিদ্ধান্তে টিকে গেলে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তই বহাল থাকে।
নাসুম তাঁর চার ওভারের স্পেলে মাত্র ১১ রান খরচায় দুটি উইকেট নেন, যার মধ্যে একটি মেডেন ওভারও ছিল। তার ইকোনমি দাঁড়ায় মাত্র ২.৭৫, যা এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বনিম্ন ইকোনমির নতুন রেকর্ড। এর আগে এ রেকর্ড ছিল মুস্তাফিজুর রহমানের, যার ইকোনমি ছিল ৩.২৫। সাকিব আল হাসানও এই একই ইকোনমিতে বল করেছেন এ টুর্নামেন্টে।
নাসুমের পর রিশাদ হোসেন তার লেগ স্পিন ও গুগলি দিয়ে আফগান মিডল অর্ডারে আঘাত হানেন। তিনি ফিরিয়ে দেন গুলবাদিন নাইবসহ দুটি উইকেট। অন্যদিকে মুস্তাফিজুর রহমান তার বৈচিত্র্যময় কাটারে তুলে নেন তিনটি উইকেট। আফগান ব্যাটারদের ব্যাটে বলে বোঝাপড়ার ঘাটতি স্পষ্ট ছিল।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে বাংলাদেশের বোলারদের ‘বিশ্বসেরা’ তকমা দেওয়ার পাশাপাশি নাসুম আহমেদের ভূয়সী প্রশংসা করেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। তিনি বলেন, “নাসুম ভাই এর আগেও নেদারল্যান্ডস সিরিজে এসেই ম্যাচসেরা হয়েছেন। এটা দারুণ বিষয় যে উনি যখনই একাদশে আসেন তখনই চেষ্টা করেন নিজের সেরাটা দেওয়ার।”
তবে তামিমের কিছুটা আক্ষেপও ছিল ম্যাচের শেষ দিক নিয়ে। তাসকিন আহমেদের এক ওভারে কয়েকটি বাউন্ডারি ম্যাচে বাংলাদেশের বড় ব্যবধানে জয়ের সম্ভাবনাকে কিছুটা কমিয়ে দেয়। তিনি বলেন, “নাসুম ভাই প্রথম ওভার যেভাবে করেছেন, সেখান থেকেই ম্যাচটা আমাদের দিকে চলে আসে। আরেকটু বড় ব্যবধানে জিততে পারতাম যদি শেষে দুই-একটা বাউন্ডারি না আসতো, সেটা আমাদের জন্য ভালো হতো।”
এই জয়ে সুপার ফোরে যাওয়ার লড়াইয়ে এখনো টিকে রইল বাংলাদেশ।