সাইফ-হৃদয়ের ফিফটি, লিটনের রেকর্ড, সুপার ফোরে বাংলাদেশের রোমাঞ্চকর জয়
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 4 ঘন্টা আগেআপডেট: 9 মিনিট আগে
সাইফ-হৃদয়ের ফিফটি, লিটনের রেকর্ড, সুপার ফোরে বাংলাদেশের রোমাঞ্চকর জয়
সাইফ-হৃদয়ের ফিফটি, লিটনের রেকর্ড, সুপার ফোরে বাংলাদেশের রোমাঞ্চকর জয়
এশিয়া কাপ মানেই উপমহাদেশীয় ক্রিকেট রোমাঞ্চের অভয়ারণ্য। সুপার ফোরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের সামনে দাঁড়ায় পুরনো প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। গ্রুপ পর্বের হারের স্মৃতি পেছনে ফেলে এক বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় তুলে নেয় লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। ফিফটির দেখা পান সাইফ ও হৃদয়, আর বল হাতে মুস্তাফিজ-মেহেদীর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রুদ্ধ হয় লঙ্কানরা। এ যেন হার দিয়ে শুরু করে জয়ের গল্পে ফেরা, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর এক ম্যাচ।
এশিয়া কাপের সুপার ফোরের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ চিরচেনা শ্রীলঙ্কা। দুই দলই ছিল একই গ্রুপে, তবে আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বের সেই মুখোমুখি লড়াইটি লিটন দাসের দলের জন্য সুখকর ছিল না। হেরে যেতে হয়েছিল টাইগারদের। তবে সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে তার পুনরাবৃত্তি হতে দেননি লিটনরা। সাইফ-হৃদয়ের জোড়া ফিফটি আর লিটনের রেকর্ডগড়া ইনিংসে এক বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
দাসুন শানাকার অসাধারণ এক ইনিংসে ভর করে লড়াই করার মতো পুঁজি তুলেছিল শ্রীলঙ্কা । ২০ ওভার শেষে লঙ্কানদের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ১৬৮ রান। ৩৭ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৬৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন শানাকা। যদিও শুরুতে একাধিকবার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তবু তাঁকে থামাতে পারেনি বাংলাদেশ।
১৬৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। দলীয় ১ রানের মাথায় শুন্য রানে সাজঘরে ফেরেন তানজিদ হাসান তামিম। এরপর অধিনায়ক লিটন দাস আর ওপেনার সাইফ হাসান দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৩৪ বলে ৫৯ রানের জুটি। যা টাইগারদের জয়ের আশায় উজ্জীবিত করে।
এই জুটির মাঝেই লিটন ২৩ রানের ইনিংসে ছাড়িয়ে যান সাকিব আল হাসানকে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাকিবের ২৫৫১ রান পেরিয়ে লিটন হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
লিটনের বিদায়ের পর জয়ের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেন সাইফ ও তাওহীদ হৃদয়। দুজন মিলে গড়েন আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ্ব জুটি। সাইফ হাঁকান দুর্দান্ত এক ফিফটি—৩৬ বলে ৪ ছক্কা ও ১ চারে ৬২ রানে থামেন তিনি। শেষদিকে অবশ্য আর কোনো ছক্কা বা চার না আসলেও তাঁর ইনিংস ছিল কার্যকর।
এদিন হৃদয়ের ব্যাটেও ছিল জবাবের বার্তা।
দীর্ঘদিনের রান খরার পর তিনি যেন জ্বলে উঠলেন এক নতুন তেজে। ৩১ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় ফিফটি তুলে নেওয়ার পর ৩৭ বলে ৫৮ রান করে চামিরার ফুলটসে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন। ফিল্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি। শামীম হোসাইনের সঙ্গে হৃদয়ের ২৭ বলে ৪৭ রানের জুটি ম্যাচের গতি বাড়িয়ে দেয়।
হৃদয়ের বিদায়ের পর বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৯ বলে ৯ রান। তবে শেষের রোমাঞ্চ জমে ওঠে যখন জাকের আলী (৪ বলে ৯) ও মাহেদী হাসান (০) দ্রুত ফিরে যান। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে নতুন ব্যাটার নাসুম আহমেদ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ঠেলে এক রান নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
শ্রীলঙ্কার হয়ে দাসুন শানাকা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ২টি করে উইকেট নেন। একটি করে উইকেট নেন নুয়ান থুশারা ও দাশমান্থ চামিরা।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আক্রমণাত্মক সূচনা পায় শ্রীলঙ্কা। কুশল মেন্ডিস (৩৬) ও পাথুম নিশাঙ্কার (২২) ব্যাটে ৬ ওভারে স্কোর ছিল ৫৩/১। তবে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে মাঝের ওভারে নিয়মিত উইকেট হারায় লঙ্কানরা।
তবে শেষদিকে ম্যাচের রং বদলে দেন দাসুন শানাকা। ৩৭ বলে অপরাজিত ৬৪ রানে দলকে পৌঁছে দেন ১৬৮-তে। এই ইনিংসে বাংলাদেশের বাজে ফিল্ডিং বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়, শামীম পাটোয়ারি ও হৃদয় মিস করেন সহজ ক্যাচ।
বাংলাদেশের বোলিংয়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল ছিলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রানে শিকার করেন ৩ উইকেট। শেখ মেহেদী ৪ ওভারে ২৫ রানে নেন ২ উইকেট।
বাংলাদেশের একাদশে ছিল দুটি পরিবর্তন। নুরুল হাসান সোহান ও রিশাদ হোসেন বাদ, দলে ফেরেন শেখ মেহেদী ও শরিফুল। শ্রীলঙ্কা অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নামে। ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডির মধ্যেও মাঠে নামেন দুনিথ ভেল্লালাগে, বাবার মৃত্যুর পরও খেলেন এই ম্যাচে।