না ফেরার দেশে কিংবদন্তি কোচ ডেভিড ট্রিস্ট; শহিদুল আলম রতনের আবেগঘন শ্রদ্ধা

না ফেরার দেশে কিংবদন্তি কোচ ডেভিড ট্রিস্ট; শহিদুল আলম রতনের আবেগঘন শ্রদ্ধা
না ফেরার দেশে কিংবদন্তি কোচ ডেভিড ট্রিস্ট; শহিদুল আলম রতনের আবেগঘন শ্রদ্ধা
ক্রিকেট বিশ্বে শোকের ছায়া নেমে এসেছে নিউজিল্যান্ডের সাবেক প্রধান কোচ ডেভিড ট্রিস্টের মৃত্যুতে। বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
ডেভিড ট্রিস্ট নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ের নাম। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাঁর কোচিংয়ে নিউজিল্যান্ড ২০০০ সালের আইসিসি নকআউট ট্রফি (বর্তমানে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি) জিতে নেয়—যা এখনও দেশটির একমাত্র বৈশ্বিক শিরোপা। তার আগে এবং পরে তিনি হংকং, নেদারল্যান্ডস ও দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন প্রভিন্স দলের কোচ হিসেবেও সাফল্য পেয়েছেন।
এই কিংবদন্তি কোচের মৃত্যুতে এক আবেগঘন স্মৃতিচারণ করেছেন সাবেক কোচ ও ক্রিকেট সংগঠক শহিদুল আলম রতন। তিনি ১৯৯৬ সালে হংকং দলের বাংলাদেশ সফরের সময় ট্রিস্টের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী ছিলেন।
তিনি জানান, “ডেভিড ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ ও ক্রিকেটের গভীর জ্ঞানসম্পন্ন কোচ। আমি ১৯৯৬ সালে তাঁর সঙ্গে প্রায় তিন সপ্তাহ কাটিয়েছি, যখন তিনি হংকং দলের কোচ এবং দলটি বাংলাদেশ সফরে এসেছিল। তখন হংকং ছিল ব্রিটিশ কলোনি। দলের অধিনায়ক এবং উইকেটরক্ষক ছিলেন ইংলিশ ক্রিকেটার প্যাট্রিক ফোর্ডহাম।”
স্মৃতিচারণে তিনি বলেন, “আমি তখন দলের লোকাল ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছিলাম এবং নিজেও তখন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলতাম। এক সকালে হঠাৎ ডেভিড আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, তৎকালীন অধিনায়ক ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত হয়ে খেলতে পারছেন না—আর দলে কোনো ব্যাকআপ উইকেটরক্ষকও নেই! তিনি আমাকে অনুরোধ করলেন ম্যাচটিতে খেলার জন্য।”
“আমি কোনো দ্বিধা না করে রাজি হই, উইকেটকিপিং করি, প্রায় ৪৭ রান করি এবং তিনটি ডিসমিসাল করি। হংকং দল সেই ম্যাচটিও জেতে!”
হাস্যরসের সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “বিশ্বাস করবেন কি না জানি না আমি একদিনের জন্য হলেও হংকং দলের হয়ে খেলেছিলাম! ডেভিড ট্রিস্টের কারণেই সেই স্মৃতি আজ মনে পড়ে গেল। তিনি না থাকলে হয়তো এই অভিজ্ঞতা কখনই হতো না।”
এই অনন্য অভিজ্ঞতা ও আবেগঘন স্মৃতির মাধ্যমে ডেভিড ট্রিস্টকে সম্মান জানানো হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এক নিরলস পরিশ্রমী ও মেধাবী কোচের ইতি ঘটল।