শেষের দৃশ্যে নায়ক শরিফুল, আফগানদের হারিয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
৯৭ প্রতিবেদক: মোহাম্মদ আফজল
প্রকাশ: 1 সপ্তাহ আগেআপডেট: 1 সেকেন্ড আগে
শেষের দৃশ্যে নায়ক শরিফুল, আফগানদের হারিয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
শেষের দৃশ্যে নায়ক শরিফুল, আফগানদের হারিয়ে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ
শুরুতে বল হাতে আঁটসাঁট বোলিং, শেষে ব্যাট হাতে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশ। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে এমন পারফরম্যান্স খুব একটা দেখা যায় না। শরিফুল ইসলাম যেন ব্যতিক্রমই ঘটালেন। একমাত্র টি–টোয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই বাংলাদেশের সিরিজ জয়ে তার ভূমিকাই সবচেয়ে বড় হয়ে উঠল।
শুক্রবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের দেওয়া ১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ছিল হতাশাজনক। কিন্তু মাঝের ওভারে শামীম হোসেন ও অধিনায়ক জাকের আলীর ব্যাটে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। এরপর শেষের কাজটি করেন নুরুল হাসান ও শরিফুল। এক সময় যে ম্যাচ অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল, সেটিই শেষ হলো পাঁচ বল হাতে রেখে বাংলাদেশের ২ উইকেটের জয় দিয়ে।
এই জয়ে সিরিজে ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ফিল সিমন্সের শিষ্যরা। শেষ ম্যাচকে সামনে রেখে বাংলাদেশ এখন চাইবে হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করতে।
১৪৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও সুবিধার ছিল না। দ্বিতীয় ওভারে মিড অনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তানজিদ হাসান। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লু হন আরেক ওপেনার পারভেজ। পরের ওভারেই বিদায় নেন সাইফ হাসান। ২৪ রানে তিন উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ।
চতুর্থ উইকেটে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক জাকের ও শামীম হোসেন। গতি সামলে দুজন মিলে গড়েন ৫৬ রানের জুটি। শামীমের ব্যাটে আসে ২২ বলে ৩৩ রান, জাকের করেন ২৫ বলে ৩২। জাকের-শামীমের এই জুটিতেই ম্যাচের মোড় বাংলাদেশের দিকে চলে আসে।
তবে এই জুটি ভাঙার পর আবারও চাপ বাড়ে। ফিরে যান জাকের, এরপর শামীমও। অন্যদিকে নাসুম (১০), সাইফউদ্দিন (৪) ও রিশাদ (১১) ফেরেন দ্রুত। ১০২ রানে পাঁচ উইকেট হারানোর পর ১৮তম ওভারে আরও দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে দল।
শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের জয়ের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান, হাতে মাত্র ২ উইকেট। নুরুল হাসানের এক ছক্কা আর শরীফুলের ২, ৪ এবং ১ রান মিলে ১৯তম ওভার থেকেই আসে ১৭ রান। তখন শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে মাত্র ২ রান। পরের ওভারের প্রথম বলেই লং অন দিয়ে চার মেরে ম্যাচ শেষ করেন শরীফুল। ৬ বলে ১১ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচের ফিনিশিং টাচ দেন তিনিই। অন্যদিকে নুরুল হাসানের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৩৩ রান। ২১ বলে ৩ ছক্কা এবং ১ চারে ৩৩ রানের ইনিংসটি সাজান নুরুল।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আফগানিস্তানের শুরুটা ধীরগতির হলেও তা ছিল স্থির। প্রথম ছয় ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তোলে ৩৫ রান।কিন্তু সপ্তম ওভারের পর থেকেই তাল কেটে যায়। সেদিকউল্লাহ আতাল ফেরেন রিশাদের বলে, ইব্রাহিম জাদরানকে থামান নাসুম। এরপর তারাখিল এবং রাসুলি ফিরে গেলে ৯০ রানের মধ্যেই আফগানিস্তান হারায় চার উইকেট।
শুধু ব্যাট হাতে নয়, বল হাতেও প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন শরিফুল। চার ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে বল করে কোনো বাউন্ডারি দেননি। ইনিংসের মাঝপথে গুরবাজকে দুর্দান্ত ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন বড় ধাক্কা। তার বোলিংয়ের নিয়ন্ত্রণই আফগানদের রানচাপায় রাখে।
তবে শেষ দিকে গুরবাজ ও নবীর ব্যাটে রানের গতি কিছুটা বাড়ে। গুরবাজ করেন ২২ বলে ৩০ রান। আজমতউল্লাহ ও নবীর ইনিংস মিলিয়ে আফগানিস্তান পায় কিছু অতিরিক্ত রান। শেষ বলের চার ছাড়া বড় শটের অভাব ছিল ইনিংসজুড়েই। নির্ধারিত ২০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৫ উইকেটে তারা তোলে ১৪৭ রান।
রিশাদ হোসেন চার ওভারে ৪৫ রান দিলেও তুলে নেন দুটি উইকেট। দুটি উইকেটই আসে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। নাসুমও নিয়েছেন দুটি উইকেট। রিশাদের মতো মুস্তাফিজও ছিলেন কিছুটা খরুচে। ৪ ওভারে তাকেও গুনতে হয়েছে ৪০ রান, তবে রিশাদ জোড়া উইকেটের দেখা পেলেও মুস্তাফিজ ছিলেন উইকেট শুন্য।